আজকে আমাদের ওয়েবসাইটটি সাজিয়েছি শহীদ মিনার অনুচ্ছেদটির মাধ্যমে। অনেকে দেখা যায় যে শহীদ মিনার অনুচ্ছেদটি সার্চ করেন। আবার শহীদ মিনার অনুচ্ছেদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান অনেকেই। তাই সবার কথা মাথায় রেখে মূলত আজকে আমাদের পোস্টটি সাজানো হয়েছে শহীদ মিনার অনুচ্ছেদটি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে। এখান থেকে আপনি শহীদ মিনার অনুচ্ছেদ সম্পর্কে খুব সুন্দর একটি ধারণা পেয়ে যাবেন বলে আশা করছি। তাহলে আর দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক।
১৯৫২ সালের ভাষা শহীদদের স্মরণীয় করে রাখার জন্য শহীদ মিনার তৈরি করা হয়েছিল। প্রতিবছরই শহীদ মিনারে ফুল নিবেদনের মাধ্যমে ভাষা শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়। ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের পর পাকিস্তানের দুইটি অংশ ছিল। পুর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তান। ব্রিটিশ সরকারের নিকট থেকে স্বাধীনতা লাভ করলেও পূর্ব পাকিস্তানীরা পশ্চিম পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করেছিল না। তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান বর্তমান বাংলাদেশ তথা পূর্ব পাকিস্তানীদের উপর নানা রকম নির্যাতন চালাত। তাছাড়া পূর্ব পাকিস্তানের সকল ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল এবং তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হতো না।
এভাবে চলতে চলতে এক সময় সর্বপ্রথম আঘাত হানে পূর্ব পাকিস্তানিদের ভাষার উপর। তারা বলে যে উর্দুই তাদের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হবে এবং তারা বাংলাকে অবজ্ঞা করে। আর বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা না করার দাবি জানাই। তখন ছাত্ররা এই দাবির প্রতিবাদ করে এবং বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য তারা জোর দাবি জানাই। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানিরা বাঙ্গালীদের এ দাবি মেনে না নিয়ে উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা করতে থাকে। এরই প্রতিবাদস্বরূপ বিভিন্ন আন্দোলন চলতে থাকে এবং ১৯৫২ সালের ২০ শে ফেব্রুয়ারি পশ্চিম পাকিস্তানিরা সারাদেশে ১৪৪ ধারা জারি করে। কিন্তু বাঙালি ছাত্ররা ১৪৪ ধারা দাবি অমান্য করে এবং তারা প্রতিবাদ মুখর থাকে। এ সময় একুশে ফেব্রুয়ারিতে আন্দোলনরত অবস্থায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ছাত্রদের উপর নির্বিচারে গুলি চালায়।
সেদিন পুলিশের গুলিতে ভাষার জন্য শহীদ হন সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারসহ আরো অনেকে। তাদের স্মৃতি রক্ষার্থে সেদিন সারারাত জেগে শহীদ মিনার তৈরি করা হয়। কিন্তু পাকিস্তানি বাহিনীরা সেই শহীদ মিনার ভেঙ্গে দেয়। শহীদ মিনার ভেঙ্গে দেওয়ার পরেও বাঙালিরা আবারও শহীদ মিনার তৈরি করে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে শহীদ মিনার তৈরি করেন। ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। এজন্য প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হয় আর এই দিনে সবাই শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি তাদের আত্মার মাগফেরাতের জন্য দোয়া করে।
পৃথিবীতে একমাত্র বাঙ্গালী জাতি রয়েছে, যারা ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছে। আর এই ভাষা দিবসকে বা শহীদ দিবসকে ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দান করেন এবং ২০০০ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি থেকে শহীদ দিবস আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এই দিন পুরো বিশ্ববাসীর বাংলা ভাষার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে এবং শহীদদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। এই বিষয়টা বাঙালি জাতি হিসেবে আমাদের নিকট খুবই গর্বের একটি বিষয়। সাধারণত এ বিষয়গুলো যদি শহীদ মিনার অনুচ্ছেদে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা যায়, তাহলে অনেক ভালো নম্বর পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।
সাধারণত ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অনুচ্ছেদ বিষয়টি পড়ানো হয়। তবে অনেক শিক্ষার্থী দেখা যায় যে অনুচ্ছেদ বিষয় টি বুঝতে পারে না। আর না বুঝতে পেরে মুখস্ত করে এবং মুখস্ত বিষয়গুলোর মধ্য থেকে পরীক্ষায় না আসলে আর লিখতে পারে না। তাই ভালো রেজাল্টও করতে পারে না। কিন্তু অনুচ্ছেদ আসলে মুখস্তের বিষয় নয়, বুঝে বুঝে পড়তে হবে। বুঝে বুঝে পড়লে যে কোন অনুচ্ছেদ অনায়াসে লেখা সম্ভব হবে। তাই পড়ার সময় মুখস্তের অভ্যাস ত্যাগ করে বুঝে পড়ার অভ্যাস তৈরি করতে হবে।