আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু হচ্ছে বৃক্ষের অবদান অনুচ্ছেদ। বৃক্ষের অবদান অনুচ্ছেদটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি অনুচ্ছেদ। এজন্য প্রত্যেকটা শিক্ষার্থীর উচিত এই অনুচ্ছেদটি সম্পর্কে ধারণা রাখা। আর অনেক সময় দেখা যায় অনেকেই বৃক্ষের অবদান অনুচ্ছেদটি খুঁজে। তাই তাদের কথা মাথায় রেখে আমাদের আজকের পোস্টটি সাজানো হয়েছে। এখান থেকে আপনি বৃক্ষের অবদান অনুচ্ছেদটি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করতে পারবেন বলে আশা করছি।
এই সুন্দর পৃথিবীকে সুন্দর ভাবে টিকিয়ে রাখার জন্য বৃক্ষের অবদান অনস্বীকার্য। এই সবুজ পৃথিবীকে আরো সবুজ করে তুলেছে বৃক্ষ। বৃক্ষ তার ফলে ফুলে নিজেকে ভরিয়ে তুলে আর সেই ফুল, ফল মানুষকে দান করেই সফলতা খুঁজে পাই। বৃক্ষ যদি না থাকতো, তবে এই পৃথিবী কখনো টিকে থাকতে পারত না। কারণ মানুষের ত্যাগ করা কার্বন ডাই-অক্সাইডে এ পৃথিবী পরিপূর্ণ হয়ে যেত। আর এই পৃথিবী মানুষের বসবাসের উপযোগী থাকত না। তাই এই পৃথিবীতে বৃক্ষের অবদান কখনো অস্বীকার করা যাবে না। বরং বৃক্ষ যে পৃথিবীকে টিকিয়ে রাখতে অনেকটা সহায়তা করেছে, এটা সবাইকেই মানতে হবে।
কিন্তু মানুষ বড় অদ্ভুত প্রাণী। যে বৃক্ষ আমাদেরকে এতটা সহায়তা করে। পৃথিবীকে টিকিয়ে রাখতে এতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, সে বৃক্ষকে দিন দিন কেটে ফেলছে, দিন দিন উজাড় করে ফেলছে বনভূমি। কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসায়ীক মুনাফা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে বা কিছু মুনাফার লাভের জন্য নির্বিচারে কাটছে নানা ধরনের গাছ। এর ফলে পৃথিবীর অনেক বড় ক্ষতি হচ্ছে।
আর মানুষের বসবাসের উপযোগিতা হারাচ্ছে এই পৃথিবী। এভাবে দিন দিন যদি বৃক্ষ কর্তন বা নির্বিচারে অনেক বৃক্ষ কাটা হয়, তাহলে একসময় পৃথিবীতে অক্সিজেনের সংকর দেখা দিবে এবং মানুষের বসবাসের উপযোগী থাকবে না এই পৃথিবী। আমাদের অবশ্যই বৃক্ষ যেন নির্বিচারে না কাটা হয় এ বিষয়ে মনোযোগী হতে হবে এবং এ বিষয়ক বিভিন্ন আইন কঠোরভাবে প্রয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। তাছাড়া জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে। কেননা সচেতনতা ছাড়া বৃক্ষ কর্তন কখনো রোধ করা বা থামানো সম্ভব হবে না।
এই পৃথিবীকে মানুষের বসবাসের উপযোগী রাখতে এবং মানুষের জীবনকে আরো সহজ করে তোলার জন্য বৃক্ষের অবদান অনস্বীকার্য। বৃক্ষ ছাড়া কখনো মানুষ তার জীবনকে এত সহজ করে তুলতে পারতো না। পৃথিবী এত সুন্দর মানুষের বসবাসের বা প্রাণীর বসবাসের উপযুক্ত থাকত না। তাই বৃক্ষ না কেটে আমাদের বৃক্ষের অবদান স্বীকার করতে হবে এবং বৃক্ষ রোপনের দিকে মনোযোগী হতে হবে।
প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করতে ও বেঁচে থাকার তাগিদে বৃক্ষরোপণ করার কোন বিকল্প নেই। অথচ আমরা বৃক্ষ রোপনের পরিবর্তে নির্বিচারে বৃক্ষ কেটে ধ্বংস করছি প্রাকৃতিক বন। ফলে আমাদের দেশের পরিবেশও আজ হুমকির সম্মুখীন। এই সংকট থেকে রক্ষা পেতে হলে অধিকহারে বৃক্ষরোপণ করতে হবে। গ্রামে -গঞ্জে, শহরে- বন্দরে সর্বত্র চালাতে হবে বৃক্ষরোপণ অভিযান। একটি দেশের শতকরা ২৫ ভাগ বনাঞ্চল থাকা আবশ্যক হলেও পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশের বনভূমির পরিমাণ মাত্র ১৭ ভাগ। ফলে বনায়ন না হলে মানুষের জীবন হুমকির সম্মুখীন হবে।
কেননা যে হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, কল কারখানা বাড়ছে, তাতে গ্রীন হাউস ইফেক্ট সৃষ্টি হচ্ছে। আর এ কারণে আমাদের দেশে বন্যা, খরা, জলচ্ছাসের মাত্রা বেড়ে চলেছে। ভূমিকম্প, ভূমিধসের মতো ঘটনাও ঘটে চলেছে। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলেছেন এভাবে চলতে থাকলে উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে ভূপৃষ্ঠে পানির উচ্চতা বেড়ে যাবে। আর এতে তলিয়ে যাবে সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা। এ ভয়াবহ বিপদের হাত থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করতে হলে পর্যাপ্ত বৃক্ষরোপণ করা উচিত। কেননা বৃক্ষরপনের ফলে প্রকৃতিতে বিদ্যমান কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাসের পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব। আর এজন্য বৃক্ষের অবদান ও প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে আমাদের বৃক্ষরোপনের দিকে মনোযোগী হতে হবে।