আমাদের ওয়েবসাইটি বেছে নেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আজকে আমাদের আর্টিকেলটির আলোচ্য বিষয় হচ্ছে মুজিবনগর দিবস রচনা। অনেক সময় দেখা যায় অনেকেই মুজিবনগর দিবস রচনাটি সার্চ করেন। তাই আমরা আজকে মূলত এই আর্টিকেলটিতে মুজিবনগর দিবস রচনাটি খুবই সহজ ভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আপনি যদি এই রচনাটি খুঁজে থাকেন তাহলে আপনি এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে উপকৃত হবেন। মুজিবনগর দিবস রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে হলে আমাদের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। আশা করি আপনি আপনার প্রয়োজনীয় তথ্যটি এই আর্টিকেল থেকে খুব সহজে পেয়ে যাবেন। তাই আর দেরি না করে শুরু করছি।
১৭ই এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এই দিনটি বিশেষ দিন হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে জোরদার করার জন্য এবং স্বাধীনতা যুদ্ধকে পরিচালনা করার জন্য ১০ ই এপ্রিল ১৯৭১ বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার অর্থাৎ মুজিবনগর সরকার গঠন করা হয়। আর ১৭ই এপ্রিল তারিখে সেই মজিবনগর সরকার শপথ গ্রহণ করে। এজন্য ১৭ই এপ্রিল তারিখেই ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিবছর এই দিনটিকে বাংলাদেশের মানুষ মুজিবনগর দিবস হিসেবে পালন করে।
একটি স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষে জাতীয়, আন্তর্জাতিক জনমত সৃষ্টি ও মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় এবং বাংলাদেশের জনগণকে তাদের বিরত সাহসিকতা ও বিপ্লবী কার্যক্রমের মাধ্যমে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে অদম্য যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য আহ্বান জানাই এই বাংলাদেশের প্রথম সরকার অর্থাৎ মুজিবনগর সরকার। এই সরকার গঠনের ফলে বিশ্বজুড়ে স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামী বাঙ্গালীদের প্রতি সমর্থন ও সহযোগিতার হাত প্রসারিত হয়। সর্বোপরি নয় মাস যুদ্ধের পর এই মুজিবনগর সরকারের হাত ধরেই ১৬ই ডিসেম্বর অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়। তাই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে মুজিবনগর সরকারের গুরুত্ব ও অবদান চির স্মরণীয় হয়ে আছে এবং তা চির ভাস্বর হয়ে থাকবে।
১৯৭১ সালে ২৫ শে মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র ঘুমন্ত বাঙালিদের ওপর হত্যাযজ্ঞে নেমে পড়ে। দেশ জুড়ে শুরু হয় স্বাধীনতা সংগ্রাম বা বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ। কিন্তু ওই যুদ্ধের বৈধতা প্রয়োজন ছিল। প্রয়োজন ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের সংঘটিত করা, অস্ত্র সুরক্ষা ও প্রশিক্ষণ। প্রয়োজন ছিল কূটনৈতিক পদক্ষেপের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন জোগাড় করা। কিন্তু এই সকল জোগাড় করার জন্য একটি নেতৃস্থানীয় দল প্রয়োজন ছিল। আর সেই প্রয়োজনের প্রেক্ষিতেই গঠন করা হয়েছিল মুজিবনগর সরকার। তৎকালীন কুষ্টিয়া অঞ্চলকে ঘিরে শুরু হয় পরিকল্পনা। কুষ্টিয়ার মাটিতে ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলিত হয়। ইসলামিয়া কলেজ মাঠে স্বাধীন বাংলা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। আর লাল সবুজের পতাকা উড়ানো হয়।
বাংলাদেশকে স্বাধীন করার পিছনে সবচেয়ে বড় অবদান বলা যায় মুজিবনগর সরকারের ছিল। সেই সরকারের কেন্দ্রীয় সদস্যরা বাংলাদেশের মুক্তির সংগ্রামকে জোরদার করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে। তাছাড়া বাংলাদেশের পক্ষে জনমত তৈরির জন্য বিশ্বের কাছে নানা ধরনের তথ্য পাঠায় সেই সরকার। এজন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতার সাথে ঘনিষ্ঠ ভাবে জড়িত মুজিবনগর সরকার। মূলত মুজিবনগর সরকারের দৃঢ় মনোবল আর নেতৃত্বের ফলে বাংলাদেশ মাত্র নয় মাসে স্বাধীনতা যুদ্ধে জয়লাভ করেছে। হয়তো মুজিবনগর সরকার ব্যতীত এই স্বাধীনতা অর্জন করা সম্ভব হতো না।
মুজিবনগর সরকারের অবদান বাংলার ইতিহাসে এক অনন্য অবদান। বাঙালি জাতি তাদের অবদান কখনো ভুলবে না। এজন্যই প্রতিবছর মুজিবনগর সরকারের বিভিন্ন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের বাঙালি জাতি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। আর ১৭ই এপ্রিল তারিখে মুজিবনগর সরকার দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে এবং ওই দিন সারাদেশের মানুষ গভীর শ্রদ্ধার সাথে মুজিবনগর দিবস পালন করে। এ সকল অবদানের জন্য মুজিবনগর সরকার বাংলাদেশের মানুষের কাছে সবসময়ই শ্রদ্ধার জায়গা হয়ে থাকবে।