মহান মুক্তিযুদ্ধের আত্মত্যাগের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি হিসেবে সাত জন বীরকে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মরণোত্তর বীরশ্রেষ্ঠ উপাধি দেওয়া হয়। দেশের বিভিন্ন জায়গায় আছে তাদের নানান স্মৃতি। আর আমাদের আজকের পোষ্টের মাধ্যমে মূলত সেই সকল বীরশ্রেষ্ঠদের বিভিন্ন কথাই তুলে ধরা হয়েছে। অনেকেই বীরশ্রেষ্ঠদের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানতে চান এবং তাদের কথা সম্পর্কে সার্চ করেন। তাই তাদের কথা মাথায় রেখে মূলত আজকের পোস্টটা খুবই সহজ এবং সাবলীল ভাবে বীরশ্রেষ্ঠদের কথা নিয়ে সাজানো হয়েছে।
আপনারা চাইলে খুব সহজে এখান থেকে আপনাদের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে নিতে পারবেন। তাই আপনারা যারা বীরশ্রেষ্ঠদের সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় জানতে চান বা বীরশ্রেষ্ঠদের কথা রচনাটি সংগ্রহ করে নিতে চান, তারা আমাদের আজকের পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়তে পারেন। আশা করি এখান থেকে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় তথ্যটি পেয়ে যাবেন।
মুক্তিযুদ্ধ বাঙালির জাতীয় জীবনে এক অবীস্মরণীয় ঘটনা। অসীম সাহসিকতা, বীরত্ব আর আত্মত্যাগার অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্ট জয় করার এক বড় ক্যানভাস এই মুক্তিযুদ্ধ। যে ক্যানভাসে চিত্রিত হয়েছিল ৭ কোটি বাঙ্গালীর মুক্তির মহাসনদ। যে সকল সাহসী আত্মত্যাগী ও দেশপ্রেমিক সন্তানদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল স্বাধীনতা তাদের মধ্যে সাতজনকে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ের শ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। সেই শ্রেষ্ঠ সন্তানেরা বাংলাদেশের জন্য এনেছিল লাল সবুজের পতাকা, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আর পৃথিবীর মানচিত্র লিখেছিল বাংলাদেশ নামক স্বাধীন সার্বভৌম একটি রাষ্ট্রের নাম।
বীরশ্রেষ্ঠ হলো বীরত্বের জন্য প্রদত্ত বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক পদক। যুদ্ধক্ষেত্রে অতুলনীয় সাহসী ও আত্মত্যাগের নিদর্শন স্থাপনকারী যোদ্ধার স্বীকৃতি স্বরূপ এই পদক দেওয়া হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ সাতজন মুক্তিযোদ্ধাকে এই পদক দেওয়া হয়েছে। গুরুত্বের ক্রম অনুসারে বীরত্বের জন্য প্রদত্ত বাংলাদেশের অন্যান্য সামরিক পদক গুলো হলো : বীর উত্তম, বিক্রম ও বীর প্রতীক। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পরই এই পদকগুলো দেওয়া হয়। ১৯৭৩ সালের ১৫ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ গেজেট এর একটি অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে এই পদক গুলোর নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ উৎসর্গকারী ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠ হলেন বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর, বীরশ্রেষ্ঠ মোঃ হামিদুর রহমান বীরশ্রেষ্ঠ মোঃ মোস্তফা কামাল, বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমিন, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ এবং বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ। তারা তাদের প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন এবং তাদের চেষ্টার বিনিময়ে আজকের বাংলাদেশ স্বাধীন হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই তো বাঙালি জাতি তাদেরকে কখনোই ভুলতে পারবে না। এজন্য প্রতিবছর বাঙালি জাতি গভীর শ্রদ্ধার সাথে বাংলাদেশের সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ সূর্য সন্তানকে স্মরণ করে।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ বাংলার ইতিহাসের এক স্বর্ণ উজ্জ্বল অধ্যায়। এই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী এবং তাদের স্থানীয় দস্যুর জামায়াতে ইসলামী, আল-বদর, আল-সামস ও রাজাকারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন বাংলার আপামর জনসাধারণ। মুক্তিযুদ্ধে অপরিসীম বীরত্ব প্রদর্শনের জন্য ৭ জন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বীরত্বের খেতাব এই বীরশ্রেষ্ঠ উপাধি প্রদান করা হয়েছে। এই উপাধি গুলো প্রদান করার মাধ্যমে মূলত সেই সাতজন বীর সন্তানকে, শ্রেষ্ঠ সন্তান কে মর্যাদা দান করা হয়েছে। এই সম্মাননা বাঙালি জাতি হিসেবে তাদের কাছে অপরিসীম। যদিও তারা তাদের জীবন দিয়ে বাঙালীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে গিয়েছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করে গিয়েছে।
বীর এবং সাহসী সন্তানেরা সবসময় একটি জাতির জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। বাংলাদেশের ও কিছু বীরশ্রেষ্ঠ, বীরপুরুষ সন্তানদের জন্যই বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। সেই সকল বীরপুরুষ সন্তানদের বাংলাদেশের মানুষ, বাঙ্গালিরা কখনোই ভুলতে পারবে না। তাইতো বিভিন্ন সময় বাঙালি জাতি তাদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে এবং তাদের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া করে। একটি জাতি হিসেবে এরকম বীর সন্তানদের পাওয়া সত্যিই অনেক গৌরবের ব্যাপার।