পদ্মা সেতু রচনা

সাধারণত রচনা বাংলা ব্যাকরণের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রাইমারি স্কুল থেকে শুরু করে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রত্যেকটি ক্লাসের শিক্ষার্থীদের বাংলা ব্যাকরণের একটি বিশেষ অংশ হিসেবে রচনা থাকে। আর এ রচনাতে অনেক বেশি নম্বর থাকে। কিন্তু অনেক শিক্ষার্থী এই বিষয়ে সচেতন থাকে না। ফলে সুন্দরভাবে রচনা না লিখতে পারার জন্য পরীক্ষায় অনেক কম নম্বর পায়। তবে একজন ভালো শিক্ষার্থী হিসেবে সবারই রচনার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত এবং সময় নিয়ে রচনাটি সুন্দরভাবে লিখা উচিত। তাহলে পরীক্ষার খাতায় অনেক ভালো নম্বর পাওয়া যায়। আর আজকের পোস্টটিতে মূলত পদ্মা সেতু রচনাটি সুন্দরভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করা হয়েছে। এখান থেকে এই রচনাটি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করা যাবে বলে আশা করছি। তাহলে চলুন আর দেরি না করে শুরু করা যাক।

পদ্মা সেতু বাংলাদেশের পদ্মা নদীর ওপর নির্মানাধীন একটি সেতু। এই সেতু বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সাথে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটাবে। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এই প্রকল্প খুলে দেবে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার। নির্মাণ কাজ শেষ হলে পদ্মা সেতুই হবে বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য হবে ৬.১৫ কিলোমিটার এবং প্রস্থ হবে ২২ মিটার। এই সেতুটি হবে দ্বিতল, উপর দিয়ে চলবে যানবাহন এবং নিচে চলবে ট্রেন। সেতুটি নির্মিত হচ্ছে কংক্রিট এবং স্টিল দিয়ে। সেতুর দুই পাশে 12 কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মিত হবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বুয়েট এবং কোরিয়া এক্সপ্রেস কর্পোরেশন এন্ড অ্যাসোসিয়েটস সেতুর নির্মাণ কাজ তদারকি করছে। পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পে ১৪ টি নতুন স্টেশনের নির্মাণ এবং ছয়টি বিদ্যমান স্টেশন উন্নয়ন ও অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। মূল সেতুর পিলার ৪২ টি। এর মধ্যে নদীর মধ্যে চল্লিশটি ও নদীর দুইপাশে দুইটি পিলার।

নদীর ভেতরের ৪০টি পিলারের ছয়টি করে মোট ২৪০ টি পাইল। এছাড়া সংযোগ সেতুর দুই পাশের দুটি পিলারের ১২ টি করে মোট ২৪টি পাইল রয়েছে। পিলারের ওপর ৪১ টি স্পেন বসানো হয়েছে। মূল সেতুর কাজ পেয়েছে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। এই সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হলে এর স্থায়িত্ব হবে ১০০ বছর। ইতোমধ্যে মূল সেতুর ৯৬ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে সেতুতে কারপেটিং, ভায়াডাক্টে কার্পেটিং, ওয়াটারপ্রুফ মেমব্রেন, মূল সেতুর মুভমেন্ট জয়েন্ট, ল্যাম্পপোস্ট, অ্যালুমিনিয়াম রেলিং, গ্যাসের পাইপ লাইন, ৪০০ কেভিয়ে বিদ্যুৎ ও রেল লাইনের কাজ চলমান। সেতু নির্মাণের মোট বাজেট ৩০হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা।

পদ্মা সেতু বাংলাদেশের মানুষের একটি স্বপ্নের নাম, যা দেশের অর্থনীতির চেহারা পাল্টে দেবে। এই সেতুর ফলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে গড়ে উঠবে ব্যাপক শিল্প কারখানা, গার্মেন্টস, গোডাউন প্রভৃতি। ব্যবসা বাণিজ্যে আসবে নতুন গতি নানা অনিশ্চয়তাকে পাশ কাটিয়ে নিজেদের টাকায় বাঙালির স্বপ্ন এখন বাস্তবের পথে। সকলের আশা এই সেতু অচিরেই বদলে দেবে দেশের অর্থনীতি, উন্নত করবে মানুষের জীবনযাত্রা।

এই বিষয়গুলোই মূলত পদ্মা সেতু রচনাটির মূল বিষয়বস্তু। যেকোনো রচনায় ভালো নম্বর পেতে হলে সে রচনার মূল বিষয়গুলো সুন্দরভাবে লেখা উচিত। রচনাতে অনেক বেশি নম্বর থাকে। তাই রচনাটি বড় করে লিখতে হবে। কেননা বড় করে না লিখলে রচনায় ভালো নম্বর পাওয়া যাবে না। তাই একদিকে যেমন মূল বিষয়গুলো পয়েন্ট আকারে রচনায় দিতে হবে, তেমনি রচনাটা বড় করতে হবে। আর হাতের লেখাটাও সুন্দর হওয়াটাও জরুরি।

আবার অনেক শিক্ষার্থী দেখা যায় যে অন্য বিষয়গুলো পরীক্ষায় খাতায় লিখতে লিখতে রচনার কথাটি তেমন গুরুত্ব সাথে মাথায় রাখে না। এর ফলে রচনা লেখার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাই না। এটি একটি বড় ধরনের ভুল। আর এই ভুলের জন্যই পরীক্ষায় অনেক কম নম্বর পায় অনেক শিক্ষার্থী। তাই রচনায় যেহেতু অনেক বেশি নম্বর থাকে, তাই রচনা লেখার জন্য সময় হাতে রাখতে হবে এবং পর্যাপ্ত সময় নিয়ে সুন্দরভাবে রচনা লিখতে হবে। আর উপরের আলোচনাকৃত বিষয়গুলো পদ্মা সেতু রচনায় লিখতে পারলে অনেক ভালো নম্বর পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।