নারীর ক্ষমতায়ন রচনা

শুধুমাত্র পুরুষ বা শুধুমাত্র নারীর দ্বারা কখনো সমাজ পরিচালিত হতে পারে না। সমাজকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য, সমাজ পরিচালনার জন্য অবশ্যই নারী ও পুরুষ উভয়েরই ক্ষমতায়ন দরকার এবং উভয়েরই সমান ভাবে সম অধিকারের ভিত্তিতে কাজ করা দরকার। কিন্তু আমাদের সমাজে নারীরা তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে সুযোগ-সুবিধা পায় না, যতটা পুরুষেরা পায়। আমাদের সকলের উচিত নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর ভূমিকা পালন করা। সমাজের প্রতিটি স্তরে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও ভূমিকা পালন করতে পারে এবং কাজ করতে পারে।

আর তার সাথে সাথে সমাজকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। আর আমাদের আজকের আর্টিকেলটিতে মূলত নারীর ক্ষমতায়ন রচনাটি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আর্টিকেলটি থেকে নারীর ক্ষমতায়ন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য লাভ করা যাবে। তাই আপনারা যারা নারীর ক্ষমতায়ন সম্পর্কে জানতে চান বা এই রচনাটি খুঁজছেন তারা আমাদের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে পারেন। আশা করি এখান থেকে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় তথ্যটি পেয়ে যাবেন। তাই আর দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক।

নারীর ক্ষমতায়নের অর্থ হলো সমাজের প্রতিটি স্তরে এমন একটি সুস্থ পরিবেশ থাকবে যেখানে নারী তার আপন সত্তায়, সাধনায়, মর্যাদার অধিকারী হয়ে উঠবে, নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করবে ব্যক্তিগত, মানবিক ও জ্ঞান সম্পদের উপর। নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাকখাওয়াত হোসেন শিক্ষার প্রসার ও দেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার তাগি দিয়েছেন। কেননা শিক্ষার প্রসার এবং সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারলে নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য সবাই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারবে। তাই আমাদের সবার আগে যেটা দরকার সেটা হচ্ছে উপযুক্ত পরিবেশে শিক্ষিত হওয়া এবং সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠা। সচেতন নাগরিক সবসময় নারী ও পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করার জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।

সাধারণত আমাদের পরিবার থেকে এমন ভাবে মেয়েদেরকে বড় করা হয় যেন মেয়েরা পুরুষদের কাছে স্বাধীন স্বাধীন নয়। সব সময় তারা পুরুষদের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু এ ধারণা সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে নারী পুরুষ উভয় স্বাধীন এবং কেউ কারো প্রতি নির্ভর না হয়েও অনেক কিছু করতে পারে। যতদিন নারীরা দাসত্ব স্বীকার করে থাকবে, যতদিন তারা সামনের দিকে এগিয়ে যাবে না, যতদিন নারীদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা যাবে না, ততদিন এই সমাজ ও দেশ কখনো এগিয়ে যেতে পারবে না। যুগে যুগে বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ নারী ও পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন নারী শিক্ষার ব্যাপারে খুবই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি চেয়েছিলেন নারীরা যেন দাসী রূপে না থাকে, তারা যেন তাদের প্রকৃত অধিকার ভোগ করতে পারে। এজন্য তিনি সংগ্রাম করে গেছেন। তার একটি লক্ষ্য ছিল শুধুমাত্র নারীদের অধিকার নিশ্চিত করা এবং নারীদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা যাতে নারীদের ক্ষমতায়ন সম্ভব হয়। আর সমাজ ও দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যায়।

একটি পরিবারের সার্বিক উন্নয়নের জন্য একজন নারীর ভূমিকা অপরিসীম। কিন্তু সেই নারীকে অবহেলা করে কোনঠাসা করে রাখা হয়। তবে সেই পরিবার কখনো ভালো করতে পারে না। তেমনি ভাবে আস্তে আস্তে সমাজ এবং দেশের উন্নয়নের জন্য নারীর ক্ষমতায়ন অনেক জরুরি। বর্তমান সময়ে নারীরা কোন অংশ পিছিয়ে নেই। তারা পুরুষের সাথে সমান তাল মিলিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই এ যুগে এসে নারীর ক্ষমতায় নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। যদি নারীর ক্ষমতায় নিশ্চিত করা না যায়, তাহলে একটি দেশ কখনো উন্নতির চরম শিখরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। যে সকল দেশগুলো উন্নত, সেই সকল দেশের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে নারী- পুরুষ সমান অধিকারের ভিত্তিতে কাজ করে এবং তাদের নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা হয়েছে।