জাতীয় শোক দিবস রচনা

১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। এই দিনটিকে সারা দেশে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। কেননা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর কিছু বিপদগামী সদস্যের হাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন। এই দিনটি বাঙ্গালি জাতির জীবনে খুবই কলঙ্কময় একটি দিন। তাইতো বাঙালি জাতি এই দিনটিকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে প্রতি বছর পালন করে আসছে। আর আমাদের আজকের আর্টিকেলটিতে এই জাতীয় শোক দিবস সম্পর্কেই বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করা হয়েছে। মূলত এখানে জাতীয় শোক দিবস রচনাটি সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে।

আপনারা যারা জাতীয় শোক দিবসের রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছেন, তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটি উপকারী হবে বলে আশা করছি। তাই আপনারা যারা এই রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান এবং এই রচনাটি লিখে ভালো নম্বর পেতে চান , তারা আমাদের আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে পারেন।

বাঙালি জাতির জীবনে যে অল্প কয়েকজন মানুষ ইতিহাস সৃষ্টি করতে পেরেছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার উদার আহবানে একদিন জেগে উঠেছিল সমগ্র বাঙালি জাতি। প্রায় ৩০ লক্ষ বাঙালির রক্তে রঞ্জিত এ বাংলাদেশের তিনি হয়ে উঠেছিলেন মুক্তির প্রতিক। হয়ে উঠেছিলেন সকল প্রেরণার উৎস। পৃথিবীর খুব কম রাজনৈতিক নেতা তার মত ঈর্ষণীয় জনপ্রিয়তা লাভ করতে পেরেছিলেন। যোজন যোজন দূরের স্বাধীনতার স্বপ্নকে তিনি বাস্তবে রূপ দিয়েছিলেন। অথচ তাকেই সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সামরিক অফিসার নির্মমভাবে হত্যা করেছিলেন।

এজন্য এই দিনটিকে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কিত দিবস হিসেবে ধরা হয়েছে। ঘাতকেরা সেদিন স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার কে হত্যা করার মাধ্যমে বাঙালির যে অপূরণীয় ক্ষতি করেছেন, তার প্রতিদান বাঙালি হয়তো কোনদিন কোন সময় দিতে পারবে না। বঙ্গবন্ধু এমন একজন মানুষ ছিলেন যিনি একজন নেতা হিসেবে একজন রাজনৈতিক কর্মীর আদর্শ, পিতা হিসেবে একটি জাতির আশ্রয় এবং ভরসার স্থল। পাহাড়ের ন্যায় কঠিন হয় সত্য আর কুসুমের ন্যায় কমল হয়ে একজন অভাবী- দুঃখী মানুষের ভরসার প্রতিক। এজন্য ঘাতকেরা সহ সবাই জানত এই একটি মানুষ পারেনা এমন কোন অসাধ্য কাজ এই বাংলায় নেই। সুতরাং সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত স্বাধীন ভূখণ্ড বাংলাদেশের অগ্রগতি থামাতে কিংবা বাংলাদেশের জয়রথ বন্ধ করতে এই মানুষটিকে নির্মূল করা খুবই দরকার।

ঘাতকের বুলেটের আঘাতে শেখ মুজিবুরের দেহবসানো হয়ে থাকলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবসান এই বাংলা থেকে কখনোই সম্ভব না। তিনি আজীবন তার কর্মের মাধ্যমে বেঁচে থাকবেন সকল বাঙ্গালীর অন্তরের অন্তস্থলে। অকৃতজ্ঞ বাঙালি তার কৃতজ্ঞতার মূল্য দিতে সারা জীবন ধরে শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করে যাবে তাদের প্রাণপ্রিয় এই নেতাকে। সেজন্যই পনেরই আগস্ট বাঙালির জীবনের সবচেয়ে বিষাদময়, কলঙ্কময় এবং শোকের দিন। বাঙালি দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে স্মরণ করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ তার পরিবারের সকল সদস্যকে। তাদের আত্মার শান্তির জন্য বিভিন্ন ধরনের দোয়ার ব্যবস্থাও করা হয় বিভিন্ন স্থানে।

১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট ছিল বাঙালি জাতির জীবনের একটি কালো অধ্যায়। বাঙ্গালি জাতি এই দিনটি পালন করে শোকের মধ্য দিয়ে। কেননা যিনি জাতির জনক তাকে যদি এভাবে নির্মমভাবে খুন হতে হয়, তাহলে এর চেয়ে বড় বেদনার মুহূর্ত তাদের জন্য আর হয় না। তাই এই দিনটি এই দেশের সকল মানুষ গভীর বেদনার সঙ্গে স্মরণ করে। মূলত স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পিছনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান কখনোই অস্বীকার করা যাবে না। মূলত তিনি না থাকলে বোধহয় আজকের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হতো না। তাইতো বাঙালি জাতির যতদিন বাংলাদেশ নামটি থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামটি মনে রাখবে, তাকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।