বাইরের চাকচিক্য কোন কিছু মূল্যায়নের মাপকাঠি নয়। বহিরঙ্গের বর্ণময় সৌন্দর্য চোখে ধাঁধা লাগালেও তা হৃদয়কে আকৃষ্ট করতে পারেনা। সোনা একটি উজ্জ্বল ও মূল্যবান ধাতু। এর উজ্জ্বলতা ও চাকচিক্য খুবই দৃষ্টিনন্দন এবং আকর্ষণীয়। তামা, পিতল ও রাংতার উজ্জ্বলতা সোনার চেয়ে কম নয়। কিন্তু তাই বলে সেগুলো গুনে মানে সোনার সমকক্ষ নয়। বরং সোনার চেয়ে অনেক নিকৃষ্টতম।
শুধু উজ্জ্বলতা ও চাকচিক্যের জন্য কোন বস্তু সোনা বলে গণ্য হতে পারেনা। কষ্টিপাথরের দ্বারা সোনার গুণগত মান যাচাই করা হয়। সোনার বাহ্যিক চাকচিক্য দ্বারা এর গুণ বা মর্যাদা নির্ণিত হয় না। মানুষের ক্ষেত্রে একথা প্রযোজ্য। বাইরের চাকচিক্য দেখে কোন মানুষ সম্পর্কে মন্তব্য করা যায় না। শুধু বাহ্যিক চাকচিক্যের মাপকাঠিতে কোন মানুষকে যথার্থ মূল্যায়ন হয় না। অভিজ্ঞ এবং দূরদর্শী ব্যক্তিমাত্রিক মানুষের বাহ্যিক অঙ্গসৌষ্ঠব বা আচরণে আকৃষ্ট না হয়ে তার অন্তর্নিহিত গুণাবলীর অনুসন্ধান করেন।
সমাজে বাহারি শয্যায় সজ্জিত ও সুশোভিতো বহু মানুষের পদচারণা পরিলক্ষিত হয়। এদের বাহ্যিক চাকচিক্য ও বাক -চাতুর্যে আকৃষ্ট হওয়া কোনক্রমে সমীচীন নই। কেননা কোন বকধার্মিক ব্যক্তি যেমন প্রকৃত ধার্মিকের আসনে ক্ষমতাসীন হতে পারে না, তেমনি কোন গুণহীন ব্যক্তি কখনো প্রকৃত গুণীর মর্যাদা লাভ করতে পারে না। এগুলোই মূলত চকচক করলেই সোনা হয় না ভাব সম্প্রসারণটির মূল বিষয়।
আজকের পোস্টটি মূলত চকচক করলেই সোনা হয় না এই ভাব সম্প্রসারণ দ্বারা বিশেষভাবে সাজানো হয়েছে। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সাধারণত ভাব সম্প্রসারণ পড়ানো হয়। আর প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর জন্য ভাব সম্প্রসারণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কারণ এই ভাব-সম্প্রসারণটি যদি ঠিকমতো লিখতে না পারা যায়, তাহলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর অর্জন করা সম্ভব নয়। তাই ভাব সম্প্রসারণের দিকে বিশেষভাবে মনোযোগ দেওয়া দরকার। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় যে শিক্ষার্থীরা এই ভাব সম্প্রসারণ বিষয়কে বুঝতে পারে না। এজন্য পরীক্ষার খাতায় ভালোভাবে উপস্থাপন করতে পারেনা আর ভালো নম্বর পায় না।
যেকোনো ভাব সম্প্রসারণ পড়ার সময় বুঝে বুঝে পড়তে হবে, মুখস্থ নয়। বুঝে পড়লে সেই বিষয়টি যদি বুঝা যায়, তাহলে যে কোন সময় অনায়াসে সে ভাব সম্প্রসারণ বিস্তারিত লেখা যাবে। কিন্তু অনেক শিক্ষার্থী দেখা যায় যে না বুঝে ভাব সম্প্রসারণ মুখস্ত করে, আর পরীক্ষায় যদি মুখস্তকৃত বিষয়গুলো না আসে, তবে সেই ভাব সম্প্রসারণ লিখতে পারে না।আবার ঠিক মতো উপস্থাপন করতে না পারার ফলে অনেক শিক্ষার্থী খারাপ রেজাল্ট করে।
চকচক করলেই সোনা হয় না এই ভাব সম্প্রসারণটি প্রত্যেকটা ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি শ্রেণীতে এই ভাব সম্প্রসারণ বিস্তারিতভাবে পড়ানো হয়। তারপরেও অনেক শিক্ষার্থীদের ভাব সম্প্রসটিতে সমস্যা থাকতে পারে। তাই যাদের সমস্যা রয়েছে, তারা যেন খুব সহজেই এই ভাব সম্প্রসারণটি বুঝতে পারে, এজন্য আজকের পোস্টটি সাজানো হয়েছে এই ভাব সম্প্রসারণটি দ্বারা।
আসলে একটি বিষয় যে চকচক করলে সোনা হবে এমনটা না। বা চকচক করলেই তার দাম বেশি হবে এমনটাও না। এমন অনেক জিনিস আছে যেগুলো চকচক করে না, একদম নরমাল মনে হয়, কিন্তু সেগুলোর চকচকে বস্তুটির চেয়ে ভালো বা দামি। তাই যেকোনো বিষয় চকচকে কিনা সেদিকে খেয়াল না করে খেয়াল করতে হবে সেই বিষয়টির গুণগত মানের দিকে। আর এই ভাব সম্প্রসারণটি দ্বারা মূলত এই বিষয়টি বুঝানো হয়েছে যে চকচক বা চাকচিক্যের দিকে গুরুত্ব না দিয়ে গুণগত মানের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে।
চকচক করলে যেমন পিতল বা তামাকে সোনা মনে হয় না। আর পিতল বা তামাকে সোনা মনে করাও বুদ্ধিমানের কাজ নয়। তেমনিভাবে বাহ্যিক চাকচিক্য দ্বারা মানুষের মূল্যায়ন করা উচিত নয়।