এ জগতে হায় সেই বেশি চায় আছে আছে যার ভুরি ভুরি / রাজার হস্ত করো সমস্ত কাঙালের ধন চুরি ভাব সম্প্রসারণ

আমাদের ওয়েবসাইটটি বেছে নেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আজকে আমাদের ওয়েবসাইট টি সাজানো হয়েছে একটু বিশেষভাবে। আজকে আমাদের বিষয় হচ্ছে মূলত ভাব সম্প্রসারণ কিভাবে লিখলে বা উপস্থাপন করলে ভালো নম্বর পাওয়া যায় এবং সঠিক সময়ের মধ্যে শেষ করা যায়, এই সকল দারুণ সব নিয়ম আজকের পোস্টের মাধ্যমে সাজানো হয়েছে। আপনি এখান থেকে খুব সহজে চাইলে এ সকল ভাব সম্প্রসারণ লিখার নিয়ম শিখে নিতে পারবেন।

বিত্তবানদের সম্পদের তৃষ্ণা অত্যন্ত প্রবল। তারা যত পায় তত চায়। গরিবের ধন কুক্ষিগত করে তারা আরো ধনী হয়। পৃথিবীতে যে শ্রেণির প্রভাব প্রতিপত্তি বেশি লক্ষ্য করা যায়, তার মধ্যে ধনী শ্রেণি অন্যতম। ধনিক বা সম্পদশালীরা তাদের সম্পদ প্রতিপত্তি জোরে সমাজে অনেক প্রভাব বিস্তার করে। আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ বসবাস করে এ।খানে কেউ ধনী, কেউ বা গরীব, কেউবা কাঙ্গাল। সমাজের কেউ বেশি সম্পদের অধিকারী, আবার কারো কম, কারো আবার নেই বললেই চলে।

এর পেক্ষিতে কারো ঘরে আতশবাজির খেলা, আবার কারো ঘরে অন্ধকারেও আলো জ্বলে না। ধনীদের অর্থের লোভ-লালসা অফুরন্ত। আমরা এটাকে সামাজিক প্রক্রিয়া বলে মনে করি। এটি আসলে মানুষের মানসিকতার প্রবণতা।

মানুষ হলো সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। কিন্তু এই মানুষের আচরণ আবার বিভিন্ন প্রকৃতির হয়। মানুষের ভিতরে বিভিন্ন ধরনের লোভ, হিংসা, মারামারি, বিদ্বেষ ইত্যাদির কারণে বিভিন্ন রকম ঝামেলার সম্মুখীন হতে হয় অনেক সময়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে সবলরা দুর্বলদের উপর অত্যাচার করে। আর এভাবে যুগ যুগ ধরে দুর্বলের উপর অত্যাচার করে আসছে। তাই দেখা যায় এই জগতে যার বেশি আছে, সে আরও বেশি চাই।

যে অনেক বেশি সম্পত্তির অধিকারী, সে চায় তার সম্পত্তি আরো কিভাবে বৃদ্ধি করা সম্ভব, আরো কিভাবে ধনী হওয়া সম্ভব। তাই সে চেষ্টা চালায় তার সম্পত্তি বৃদ্ধি করার জন্য। বেশিরভাগ মানুষই চায় অগাধ সম্পত্তির মালিক হতে। এভাবে চলতে থাকে লোভ আর আজকের মূলভাবটি মূলত এই লোভকে কেন্দ্র করেই পরিচালিত হচ্ছে।

এ জগতে হায় সেই বেশি চায় আছে যার ভুরি ভুরি, রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি এই ভাব-সম্প্রসারণটি মূলত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দুই বিঘা জমি কবিতার অংশ। সেই কবিতাটিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর উল্লেখ করেছেন দরিদ্র কৃষকের জমি কিভাবে জমিদার নিজের করে নেয় এবং সেই সম্পত্তিতে প্রকৃত মালিককে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করে।

মূলত এই ভাব সম্প্রসারণটির মাধ্যমে জমিদার শ্রেণী বা ধনী ব্যক্তিদের লোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এবং দরিদ্রদের বঞ্চিতের বিষয়টি দেওয়া হয়েছে। যুগ যুগ ধরে এ ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়ে আসছে এই পৃথিবীতে। কিন্তু এটি পরিবর্তন করা দরকার। এভাবে চলতে থাকলে বঞ্চিতরা কখনোই তাদের অধিকার ভোগ করতে পারবে না।

সাধারণত ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ভাব সম্প্রসারণ পড়ানো হয়। আর প্রত্যেকটা শিক্ষার্থীর জন্য ভাব সম্প্রসারণ বিষয়টি বুঝে নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বাংলা ব্যাকরণ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি টপিক হচ্ছে ভাব সম্প্রসারণ। এখানে ভালো নম্বর না পেলে পুরো বিষয়টির গড়মার্ক ভালো আসবে না। তাই ভালো রেজাল্ট করা সম্ভব হবে না। তাই ভালো রেজাল্ট করতে হলে অবশ্যই ভাব সম্প্রসারণের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে এবং ভাব সম্প্রসারণ কে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করতে হবে।

সকলের মঙ্গলের জন্য সর্বগ্রাসী এ চাওয়ার প্রক্রিয়াকে হতাহত করতে না পারলে সমাজের মঙ্গল সাধন করা যাবে না। আর ধনী- গরিবের মধ্যে বৈষম্য আরও প্রকট আকার ধারণ করবে। তাই এই বৈষম্য দূরীকরণে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। এবং ধনী-দরিদ্র, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাইকে সমান সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।