শিশুকাল অতিক্রমের আগে অর্থের বিনিময়ে বা বিনা বেতনে কেউ কায়িক শ্রমের কাজে নিয়োজিত হলে তাকে শিশুশ্রম বলে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা এই ধরনের শ্রমকে শোষণ বলে বিবেচনা করে। বহু দেশে এটিকে অবৈধ্য ঘোষণা করা হয়েছে এবং আমাদের দেশেও শিশুশ্রমকে নিরুৎসাহিত করা হয়। শিশুশ্রমকে গুরুত্বের সাথে নিয়ে ১২ জুন বিশ্ব শ্রম দিবস পালিত হয়। মূলত অসচ্ছল ও দরিদ্র পরিবারের সন্তানরা শিশুশ্রমের সাথে নিয়োজিত। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে গ্রেট ব্রিটেনে সর্বপ্রথম শিশুশ্রম একটি সামাজিক সমস্যা হিসেবে চিন্তিত হয়। ২০০৬ সালের শিশু সনদে ১৪ বছরের কম বয়সি শিশুদের শ্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং ১৮ বছরের কম বয়সি শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তবুও থেমে নেই শিশুশ্রম। লেখাপড়ার খরচ না দিতে পারা, সংসারের অস্বচ্ছলতা পিতা- মাতাকে বাধ্য করে সন্তানকে শ্রমে নিযুক্ত করতে। শিশুশ্রম শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করে। একটি দেশের গুনগত ও টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে যে সকল বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হয় তার মধ্যে শিশু শ্রম কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। শিশুদের মাঝে সুপ্ত থাকে অমিত সম্ভাবনা। আজকের শিশুই আগামী দিনের কবি, সাহিত্যিক, বিজ্ঞানী, রাজনীতিবিদ,, অর্থনীতিবিদ বা শিক্ষাবিদ। ভবিষ্যতের কর্ণধার এই শিশুদের নির্ঝঞ্বাট ও মসৃণ পথচলা নিশ্চিত করতে পারলেই একটি সমৃদ্ধ দেশ গঠনের পথ অনেকটা সুগম হয়।
তাই রাষ্ট্র, সমাজ ও সুযোগ থাকলে ব্যক্তি উদ্যোগে শিশুশ্রম বন্ধে তৎপর হওয়া জরুরি। শিশুদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে ও তাদের বিকাশে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। তবেই আজকের শিশু আগামীর সম্পদে পরিণত হবে।
শিশুশ্রম রোধ করে শিশুদের স্কুলমুখী করতে পারলে এবং বিভিন্ন কর্মমুখী শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারলেই এই বিশার জনসমষ্ঠিকে জনসম্পদে পরিণত করা সম্ভব হবে। শিশুদের সুন্দর আগামী গড়তে তাই সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সেই সাথে সরকারকেও বিভিন্ন ধরণের উদ্যোগ নিতে হবে। শিশুশ্রম বন্ধ করার জন্য কঠোর আইনী ব্যবস্থা নিতে হবে। সেই সাথে সকলের সচেতনাপূর্ণ মনোভাব গড়ে তুলতে হবে।তাহলেই শিশুশ্রম রোধের পাশাপাশি শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
অনুচ্ছেদ বিষয়টি আসলে কঠিক কোন কিছু না। এটা খুবই সহজ একটি বিষয়। তবে অনেক সময় দেখা যায় অনেক শিক্ষার্থী অনুচ্ছেদ বিষয়টি বুঝতে না পেরে মুখস্ত করে। এর ফলে মুখস্ত নির্দিষ্ট বিষয়গুলোর মধ্যে থেকে পরিক্ষায় না এলে লিখতে পারে না। তাই সবার কথা মাথায় রেখে যেন মুখস্তের ঝামেলা ছাড়ায় খুব সহজভাবে যেন সবাই শিশুশ্রম অনুচ্ছেদটি আয়ত্ব করতে পারে এবং এভাবে পরিক্ষার খাতায় উপস্থাপন করে ভালো রেজাল্ট করতে পারে, এজন্য আমাদের আজকের পোস্টটি সাজানো হয়েছে।
আসলে শিশুরা জাতির ভবিষ্যৎ। তারায় জাতিকে একসময় নেতৃত্ব দিবে। এ পৃথিবীর সকল মানুষই একবাক্যে শিকার স্বীকার করেন যে, শিশুরাই দেশ ও জাতির শ্রেষ্ঠ সম্পদ। আজকের শিশুরাই আগামী বিশ্বের নাগরিক। আমরা যখন ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের কথা বলি, তখন এই প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য কি পরিকল্পনা গ্রহণ করছি, তা খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। কেননা এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে একটি দেশের কোনরকম টেকসই উন্নয়ন সম্ভব হতে পারে না। শিশুদের মৌলিক অধিকারসহ অসংখ্য অধিকারের কথা আজ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ও প্রতিষ্ঠিত।
প্রতিদিন এই সুন্দর পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ শিশু তাদের অধিকার থেকে বন্ঞ্চিত হচ্ছে আর বিভিন্ন ধরণের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিযুক্ত হচ্ছে। কোটি কোটি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে, শিক্ষার আলো থেকে বন্ঞ্চিত হচ্ছে আর অনিরাপদ জীবনযাপন করছে। তবে সবার মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে শিশুশ্রম দুর করা সম্ভব। তাছাড়া আমাদের শিশুনীতি, শিশু আইন, শিশুশ্রম নিরসন নীতি, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনসহ শিশুদের সুরক্ষামূলক আইনগুলো বাস্তবায়নে সরকারকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। এগুলোই মূলত এই অনুচ্ছেদটির মূল বিষয়বস্তু।