“আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদের একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দেব” – নেপোলিয়নের এই চিরস্মরণীয় কথার প্রতিধ্বনি আজও বিশ্বব্যাপী অনুরণিত হচ্ছে। কেননা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ নারী এখনও শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। ফলে সন্তানের প্রথম শিক্ষকই থেকে যাচ্ছে শিক্ষার অন্তরালে। উন্নত জাতি গঠনে তৈরি হচ্ছে প্রতিবন্ধকতা। সন্তান শিক্ষিত না হলে স্বাভাবিকভাবেই জাতির ভবিষ্যৎ অন্ধকার। কেননা আজকের শিশুই তো আগামী দিনের কর্ণধার। ফলে একটি দেশ, সমাজ, রাষ্ট্র, পরিবার, সে দেশের উন্নয়ন ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, এমনকি ব্যক্তিগত উৎকর্ষের ক্ষেত্রে ও নারী শিক্ষার প্রয়োজন।
নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন নারী শিক্ষা প্রসঙ্গে বলেছেন, “নারী শিক্ষায় একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের প্রধান উপকরণ সমূহের মধ্যে অন্যতম ” তাই আজ সভ্যতার বিকাশে নারী শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। নারীর জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন সারাজীবন নারী শিক্ষার জন্য লেখালেখি করেছেন। কেননা তিনি অনুধাবন করতে পেরেছিলেন পুরুষের পাশাপাশি নারীকেও হতে হবে শিক্ষিত ও স্বাবলম্বী। না হলে বাঙালি পুরুষ একাকি উন্নতির শিকড়ে আরোহন করতে পারবে না।
আজ একবিংশ শতাব্দীর এই অগ্রগতির সময়েও আমাদের অধিকাংশ নারীই শিক্ষাবন্ঞ্চিত। ফলে নারী শিক্ষার অগ্রগতির জন্য নানামুখী পদক্ষেপ নিতে হবে। নারী নির্যাতন ও বাল্যবিবাহ বন্ধ করে নারীর শিক্ষা গ্রহণের পথকে সুগম করে দিতে হবে। নারীদের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি শিক্ষাব্যবস্থা অবৈতনিক করতে হবে। বিনামূল্য শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ করে দরিদ্র ও সুবিধা বঞ্চিত নারীদের সহযোগিতা করতে হবে। ব্যবস্থা করতে হবে উপবৃত্তির। শুধু তাই নয়, নারীদের মানসিক জগতের নানা বৈষয়িক বৈচিত্রকে প্রাধান্য দিতে হবে আর প্রাধান্য দিয়ে তৈরি করতে হবে শিক্ষা ব্যবস্থা। সর্বোপরি নারী শিক্ষার ব্যাপক অগ্রগতি সাধনের লক্ষ্যে সরকারকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
কেননা নারী শিক্ষা ছাড়া সমাজ এবং রাষ্ট্রের উন্নত বা অগ্রগতির উপায়ান্তর নেই। শুধুমাত্র পুরুষতান্ত্রিক সমাজের দ্বারা কখনো একটি দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। কেননা একটি দেশের বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে নারী। আর সে নারীদের যদি অন্ধকারে রাখা হয়, তবে একটি দেশ কখনোই আলোকিত করা সম্ভব হবে না। এজন্য শুধু পুরুষদের নয়, পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের শিক্ষার হার বৃদ্ধি করতে হবে। তাদের প্রাপ্য মর্যাদা প্রদান করতে হবে এবং সকল প্রকার নির্যাতনের হাত থেকে তাদের রক্ষা করতে সকলকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। তাহলে নারীরা যেমন এগিয়ে যাবে, সেই সাথে সাথে সার্বিকভাবে একটি দেশ ও জাতি এগিয়ে যাবে অনেক দূর।
আবার শিক্ষিত নারী যেমন নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করতে পারে। তেমনিভাবে একটি পরিবারকে স্বাবলম্বী করার জন্য পুরুষের পাশাপাশি সমানভাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিভিন্ন উপার্জন মুলক কাজও করতে পারে। এর ফলে একটি পরিবার যেমন এগিয়ে যাবে, সেই সাথে সাথে পরিবারটির পাশাপাশি একটি দেশও উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে যাবে। তাই একটি দেশ ও জাতির সার্বিক উন্নয়নের জন্য নারী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। আর এই অপরিহার্যতা কোনোভাবে অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।
নারী শিক্ষা অনুচ্ছেদ সম্পর্কে যদি এই বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে লেখা যায়, তাহলে ভালো নম্বর অর্জন করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি। কেননা যে কোন লেখা সুন্দরভাবে উপস্থাপনের জন্য সেই লেখার মূল বিষয়বস্তু আয়ত্ত করতে হবে। আর আয়ত্ত করতে পারলে যে কোন সময় অনায়াসেই সেই বিষয় সম্পর্কে সুন্দরভাবে লিখা সম্ভব হবে। আবার অনেকে দেখা যায় যে না বুঝে মুখস্ত করে। আর মুখস্ত বিষয়গুলো থেকে পরীক্ষায় না এলে তা লিখতে পারেনা। কিন্তু অনুচ্ছেদ আসলে মুখস্তর বিষয় নয়। বুঝে বুঝে পড়লে যে কোন অনুচ্ছেদ সম্পর্কে বিস্তারিত লিখা সম্ভব হবে। আর আমাদের আজকের পোস্টে নারী শিক্ষা অনুচ্ছেদ সম্পর্কে সুন্দরভাবে সহজ ও সাবলীল ভাষায় লিখা হয়েছে। এখান থেকে যে কেউ এ অনুচ্ছেদ সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা নিতে পারবে বলে আশা করছি।