আমরা অনেকেই বাংলা ব্যাকরণ পড়তে পছন্দ করি। কিন্তু অনুচ্ছেদ বিষয়টি সম্পর্কে অনেকেরই তেমন ধারণা নেই। বাংলা ব্যাকরণের একটি বিশেষ টপিক হচ্ছে অনুচ্ছেদ। কিন্তু দেখা যায় যে অনেকেই এই অনুচ্ছেদ লিখতে পারদর্শী হয় না। আবার অনুচ্ছেদ লেখে ভালো নম্বরও পায় না। তাই যারা অনুচ্ছেদ লিখে অনেক ভালো নম্বর পেতে চান, অনুচ্ছেদ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা অর্জন করতে চান, তাদের জন্য আজকের পোস্টটির ভিন্নভাবে সাজানো হয়েছে। এখান থেকে আপনি অনুচ্ছেদ সম্পর্কে খুবই সহজভাবে বিস্তারিত বিষয় জানতে পারবেন বলে আশা করছি। তবে এই পোস্টটিতে মূলত জাদুঘর অনুচ্ছেদটিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আপনি যদি জাদুঘর অনুচ্ছেদটি খুঁজেন, তবে এই পোস্টটি আপনি দেখতে পারেন।
জাদুঘর বা সংগ্রহশালা বলতে এমন একটি ভবন বা প্রতিষ্ঠানকে বুঝায়, যেখানে পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন সমূহ সংগ্রহ করে রাখা হয বা সংরক্ষিত থাকে। এটি একটি দেশের ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক হিসেবে কাজ করে থাকে। পৃথিবীর সব দেশেই তাদের নিজস্ব ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রয়েছে। জাদুঘরে সেই সব ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও জীবন সংগ্রামের ঐতিহাসিক নিদর্শন সমূহ সংগৃহীত থাকে। পৃথিবীতে এমন অনেক জাদুঘর আছে, যেসব জাদুঘর তাদের সংগৃহীত নিদর্শনের সমৃদ্ধি ও বৈচিত্রের কারণে পৃথিবীব্যাপী প্রসিদ্ধ।
যেমন ফ্রান্সের ল্যুভর মিউজিয়াম। এটি বারোশো খ্রিস্টাব্দে নির্মিত হয়। এখানে গ্রিক, মিশরীয়, রোমান্স প্রাচ্যদেশীয় অসংখ্য নিদর্শন রয়েছে। এর পাশাপাশি সংরক্ষিত রয়েছে মধ্যযুগ রেনেসাঁস ও আধুনিক কালের বহু বিখ্যাত শিল্পী ও ভাস্করের শিল্প ও ভাস্কর্য। লিওনার্দো দা ভিঞ্চির মোনালিসা ল্যুভর মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে। বর্তমানে বাংলাদেশে আশিটিরও বেশি জাদুঘর রয়েছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরনো রাজশাহীর বরেন্দ্র জাদুঘর। এটি ১৯১০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। শাহবাগে অবস্থিত আমাদের জাতীয় জাদুঘর ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এছাড়া সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বৈচিত্র্যময় নিদর্শন নিয়ে গড়ে উঠেছে অনেক জাদুকর।
জাদুঘর বর্তমানের সাথে অতীতের যোগসূত্র স্থাপন করে। জাদুঘরের মাধ্যমে আমরা অনেক জ্ঞান লাভ করতে পারি। একটি জাতির ঐতিহ্য সন্ধানে জাদুঘরের মতো সহায়ক আর কিছু নেই। এনসাইক্লোপিডিয়া বা বিশ্বকোষে যেমন বিশ্বের খবর লিপিবদ্ধ থাকে, তেমনি জাদুঘরে অতীত যেন জীবন্ত হয়ে দর্শকের কাছে ধরা দেয়। আর তাই জাতীয় জীবনে জাদুঘরের প্রয়োজন সীমাহীন। এটি কোন জাতির শিকড় অনুসন্ধানে সাহায্য করে।
মূলত একটি জাদুঘর একটি দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং প্রাচীন সব নানা কার্যাবলী কে ধারণ করে। আর সে সকল সংরক্ষিত বিষয়বস্তু থেকে সেই দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সমৃদ্ধি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করা যায়। তাই যুগ যুগ ধরে মানুষ জাদুঘর প্রতিষ্ঠার দিকে মনোযোগী হয়েছে এবং একটি দেশের ইতিহাস গাথা বা ঐতিহ্যর ধারক-বাহক বিভিন্ন উপাদান গুলো স্থান লাভ করেছে জাদুঘরে। তাই জাদুঘরকে সংরক্ষণের দায়িত্ব আমাদের সবাইকে নিতে হবে এবং এক জাতি থেকে অন্য জাতির কাছে একটি দেশের সমৃদ্ধ কথা পৌছে দিতে এই জাদুঘর ভূমিকা পালন করবে।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বা প্রান্তে বিভিন্ন জাদুঘর রয়েছে। আর সেই সকল জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে বিভিন্ন রকমের অতীত ঐতিহ্য। আর সেই সকল ঐতিহ্য দেখতে ভিড় জমে নানা মানুষের। এগুলো থেকে বুঝা যায় একটি দেশ পূর্বে কেমন ছিল এবং এখান থেকে শিক্ষা লাভ করে ভবিষ্যতে নিজেদের আচরণ কেমন হবে তা অনেকটা অনুমান করা যায়।
এভাবে চলতে পারলে একটি দেশ পূর্বের ইতিহাস থেকে থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে ভালো করতে পারবে। তাই একটি দেশের জন্য অন্যতম একটি পাওয়া হচ্ছে জাদুঘর। এবং জাদুঘর সংরক্ষণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আর দেশের ইতিহাস রক্ষায় ভূমিকা পালন করতে হবে। কেননা জাদুঘর যদি না থাকে, তাহলে পূর্বের ইতিহাস সম্পর্কে কখনো ধারণা লাভ করা সম্ভব হবে না। আশা করি জাদুঘর অনুচ্ছেদটি বুঝতে পেরেছেন।